দুই আসরে জয় শূন্য অস্ট্রেলিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দুই আসরে জয় শূন্য অস্ট্রেলিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সফলতম দলগুলোর একটি হলো অস্ট্রেলিয়া। রিকি পন্টিংয়ের অধীনে ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০০৯ সালে অপরাজিত থেকে শিরোপা ঘরে তোলে তারা। কিন্তু এর পরের দুই আসরে গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুনো তো দূরের কথা, কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি তারা! বুধবার পাকিস্তানে শুরু হতে যাওয়া এবারের টুর্নামেন্টে স্টিভ স্মিথের নেতৃত্বে দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছাড়াই মাঠে নামছে দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।

২০১৩ ও ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর। সেই দুই আসরে মাঠের লড়াই ছাড়াও অস্ট্রেলিয়াকে লড়তে হয়েছিল প্রকৃতির সঙ্গেও। ৬ ম্যাচের মধ্যে ৩টিই পরিত্যক্ত হয় বৃষ্টির কারণে।

২০১৩ সালের আসরে গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের দুটিতে হারে অজিরা। ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচ হারের পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছেও হারে তারা।

পরের আসরে বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত হয় নিউ জিল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ দুটি। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের কাছে আবারও হারের মুখ দেখে স্মিথের দল।

এবারের আসর শুরুর আগেই অংশগ্রহণকারী প্রায় সব দলেই পড়েছে চোটের হানা। এ কারণে প্রাথমিক ঘোষণা করা দল থেকে বাদও পড়েছেন অনেকে। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেয়েছে অস্ট্রেলিয়াই।

চোটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সসহ টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ ও পেসার জশ হ্যাজেলউড। অন্যদিকে প্রাথমিক দলে থাকা অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নাস আচমকাই ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ায় শক্তি হারায় অজিরা। আর দলকে শেষ ধাক্কাটা দেন মিচেল স্টার্ক। চূড়ান্ত দল জমার দেওয়ার শেষ দিন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন বাঁহাতি এই পেসার। ফলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দলের মূল তিন পেসারকে ছাড়া এক আনকোরা বোলিং আক্রমণ নিয়ে জয়ের খোঁজে মাঠে নামবে স্মিথের দল।

তবে আসর শুরুর আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে খেলা দুটি ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে তাদের ব্যাটিং। প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের দেওয়া ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যাচ হারে ৪৯ রানে। আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ছয়বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা গুটিয়ে যায় মাত্র ১০৭ রানে, যা এশিয়ার মাটিতে তাদের সর্বনিম্ন।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে স্মিথ, ট্র্যাভিস হেড, মারনাস লাবুশেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো অভিজ্ঞরা থাকলেও বোলিং আক্রমণে অভিজ্ঞ বলতে কেবল আছেন লেগ-স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা। স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজেলউড পেসত্রয়ীর বদলে দলে থাকা সব পেসাররা মিলেও খেলেননি ৫০টি ওয়ানডে। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে অনভিজ্ঞ এই বোলিং আক্রমণকে দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ‘বি গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানকে। এদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে ভাল ছন্দে আছে আফগানরাই। নিজেদের খেলা সবশেষ পাঁচ ওয়ানডেতে মাত্র একটিতে হেরেছে রশিদ-নবীরা।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার মতো বাজে অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডেরও। সবশেষ পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছে প্রোটিয়ারা। আর পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটিতে জয় ইংলিশদের।

লাহোরে আগামী শনিবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অভিযান শুরু করবে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথের নেতৃত্বে অনভিজ্ঞ এক দল নিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের জয় খরা কাটাতে পারবে কি না, তা দেখার অপেক্ষায় আছেন বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলটির ভক্ত-সমর্থকরা।

মন্তব্য করুন: