হার দিয়ে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ম্যাচের ফল অনেকটাই নির্ধারণ হয়ে গেছিল বাংলাদেশের ইনিংস শেষেই। বোলাররা অসাধারণ কিছু করতে না পারায় ভারতের কাছে ৬ উইকেটের হার দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অভিযান শুরু করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর ষষ্ঠ উইকেটে জাকের আলী ও তাওহিদ হৃদয়ের রেকর্ড জুটিতে ২২৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে শুবমান গিলের শতকে ২১ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় ভারত।
৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে জাকের-হৃদয়ের ১৫৪ রানের জুটিটি ছিল ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে যে কোনো দলের জন্য সর্বোচ্চ। এছাড়াও এই জুটি ভেঙে দিয়েছে ওয়ানডেতে ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডও। আগের রেকর্ডেও ছিলেন জাকের। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তারা ১৫০ রানের জুটি গড়েছিলেন।
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে শেষ ব্যাটার হিসেবে হৃদয় আউট হন ১০০ রান করে। অন্যদিকে ভারতের হয়ে অষ্টম শতক হাঁকিয়ে গিল অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে।
রান তাড়ায় ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়া রোহিত শর্মা ও গিলের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৬৯ রান। প্রথম পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার আগের বলে ৪১ রান করা রোহিতকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেও বেশ স্বাচ্ছন্দেই রান তুলতে থাকেন বিরাট কোহলি ও গিল। তবে ২২ রান করা কোহলিকে তুলে নিয়ে রাত তোলার গতিতে ছেদ ঘটান রিশাদ হোসেন। দ্রুত শ্রেয়াস আইয়ার (১৫) ও অক্ষর প্যাটেলের উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেন বোলাররা। তবে এক্ষেত্রে সহায়তা পাননি ফিল্ডারদের।
দলীয় ১৭২ রানে স্কোয়ার-লেগে লোকেশ রাহুলের সহজ ক্যাচ ছাড়েন জাকের। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরো নিজেদের দিকে নিয়ে নেয় ভারত। ১২৫ বলে টানা দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি তুলে নেন গিল। বলের হিসেবে ডানহাতি এই ব্যাটারের এটি সবচেয়ে ধীরগতির। তানজিম হাসান সাকিবের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন রাহুল।
বাংলাদেশের হয়ে ২টি উইকেট নেন রিশাদ। মুস্তাফিজ ও তাসকিনের শিকার একটি করে উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৯ রান। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার, শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। ৫ রান করে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ভালো শুরু পেলেও ২৫ রানের বেশি করতে পারেননি তানজিদ হাসান তামিম।
নবম ওভারে পরপর দুই বলে তানজিদ ও মুশফিককে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে বড় ধাক্কা দেন প্যাটেল। হ্যাটট্রিকও প্রায় করে ফেলেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। কিন্তু জাকেরের দেওয়া সহজ ক্যাচটি প্রথম স্লিপে তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন ভারত অধিনায়ক রোহিত।
জীবন পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি জাকের। হৃদয়কে নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে শুরু করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে এক্ষেত্রে অবদান আছে ভারতীয় ফিল্ডারদেরও। দলীয় ৭৯ রানে হৃদয়ের সহজ ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন হার্দিক পান্ডিয়া। সে সময় ২৪ রানে ব্যাট করছিলেন হৃদয়।
অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে লং-অনের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ১১৪ বলে ৬৮ রান করে জাকের সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ষষ্ঠ উইকেটের রেকর্ড জুটি।
রিশাদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে আড়াইশ রানের দিকে এগুচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটারের ১২ বলে ১৮ রানের ইনিংসটি থামলে তা আর হয়নি। শেষ দিকে হৃদয় পায়ের ক্র্যাম্পে পড়লে অস্বস্তি নিয়ে ১১৪ বলে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে তিনি সাজঘরে ফিরলে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
শামির শিকার ৫ উইকেট। হার্শিত রানা নেন ৩ উইকেট।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: