ইংলিসের শতকে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইংলিসের শতকে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

বেন ডাকেটের রেকর্ড গড়া শতকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের কীর্তি গড়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু জশ ইংলিসের ব্যাটিং তাণ্ডবে সেই রেকর্ড স্থায়ী হলো মাত্র কয়েক ঘণ্টাই। ডানহাতি এই ব্যাটারের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে আইসিসির যে কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

শনিবার লাহোরে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ের প্রথম অংশটা ছিল ডাকেটময়। বাঁহাতি এই ব্যাটারের ১৬৫ রানের ওপর ভর করে ৮ উইকেটে ৩৫১ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। জবাবে পঞ্চম উইকেটে অ্যালেক্স ক্যারিকে নিয়ে ১৪৬ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়েন ইংলিস। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে ১৫ বল হাতে রেখে জয়ের বাকি কাজটুকু সারেন তিনি।

এর আগে আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল পাকিস্তানের। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৪৫ রানের লক্ষ্য ৬ উইকেট হাতে রেখে তাড়া করেছিল তারা। আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড শ্রীলঙ্কার। ২০১৭ সালের সবশেষ আসরে দেশটি ভারতের বিপক্ষে ৩২২ রান তাড়া করেছিল।

ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া করার হিসেবে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে ৩৫৯ রান করে ম্যাচ জিতেছিল তারা।

৮৬ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা ইংলিস। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলা ডাকেট তার ১৪৩ বলের ইনিংসটি সাজান ১৭ চার ও ৩ ছক্কায়।

ইংলিস-ক্যারির ১১৬ বলে ১৪৬ রানের জুটির সামনে অসহায় হয়ে পড়ে ইংল্যান্ডবড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ২৭ রানের মধ্যেই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার ট্র্যাভিস হেড (৬) ও স্টিভ স্মিথকে (৫) হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে তারা। তৃতীয় উইকেটে ৯১ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন ম্যাথিউ শর্ট ও অভিজ্ঞ মারনাস লাবুশেন। ৪৭ রান করা লাবুশেন ফিরলে এই জুটি ভাঙার পর শর্টও (৬৩) ফেরেন দ্রুত।

এরপরই ইংলিশ বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন ইংলিস-ক্যারি জুটি। বেশ স্বাচ্ছন্দে সিঙ্গেল-ডাবলসের পাশাপাশি বাউন্ডারি আদায় করে দলকে জয়ের পথে রাখেন তারা। তবে ম্যাচে ফেরার সুযোগ এসেছিল ইংল্যান্ডের সামনেও। কিন্তু ৩৮তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারির একটু সামনে ক্যারির সহজ ক্যাচ তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন জফরা আর্চার। সে সময় ৭৩ বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১০৪ রান। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ইংলিশরা।

৪২তম ওভারে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকা ৬৯ রান করা ক্যারির উইকেট তুলে নিলেও তা আর কাজে লাগেনি। সঙ্গীর বিদায়ের পর ৭৭ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইংলিস। ষষ্ঠ উইকেটে ইংলিস-ম্যাক্সওয়েলের ৩৬ বলে ৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সহজেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। মার্ক উডের বলে ডিপ মিড-উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন ইংলিস।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড এখন ডাকেটেরএর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের শুরুটা আক্রমণাত্মক হলেও তা ভালো হয়নি। ৪৩ রান তুলতেই হারায় ২ উইকেট। তৃতীয় উইকেটে জো রুটকে নিয়ে ডাকেটের ১৫৮ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পায় তারা। ৬৮ রান করা রুটকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। দ্রুতই এই লেগ-স্পিনারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন হ্যারি ব্রুকও (৩)।

তবে অপর প্রান্তে বোলারদের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকে ডাকেট। ৯৫ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিয়ে দ্রুত রান তুলতে পারেননি কেউ। অধিনায়ক জস বাটলার ২৩ ও লিয়াম লিভিংস্টোন ১৪ রান করে সাজঘরের পথ দেখেন। শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি এই ব্যাটারের রেকর্ড গড়া ইনিংসটি থামান লাবুশেন। এরপর আর্চারের ২১ বলের ঝড়ো ইনিংসে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ গড়ে ইংল্যান্ড।

[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]

মন্তব্য করুন: