কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের কাছে উড়ে গেল পাকিস্তান
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ধীরগতির ব্যাটিং ও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যটা বেশি বড় দিতে পারেনি পাকিস্তান। রান তাড়ায় বল হাতে অসাধারণ কিছু করতে না পারা বোলাররা বিরাট কোহলির সামনে যেন হয়ে পড়লেন আরও অসহায়। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পাশাপাশি দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন কোহলি।
রোববার দুবাইয়ে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারায় ভারত। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ বল বাকি থাকতে ২৪১ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। জবাবে কোহলির দুর্দান্ত শতকে ৪৫ বলে হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় ভারত।
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে জেতানোর পাশাপাশি ম্যাচে জোড়া কীর্তি করেন কোহলি। শচীন টেন্ডুলকারকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে কম ইনিংসে ওয়ানডেতে ১৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। কীর্তি গড়তে ডানহাতি এই ব্যাটার খেলেছেন কেবল ২৮৭ ইনিংস। অন্যদিকে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ১৪ হাজার রান করতে টেন্ডুলকার খেলেছিলেন ৩৫০ ইনিংস।
এছাড়াও ফিল্ডিংয়ের সময় মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনকে টপকে ওয়ানডেতে ভারতের ফিল্ডার মধ্যের সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড গড়েন কোহলি। আজহারউদ্দিনের ১৫৬ ক্যাচ ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে তার ক্যাচ সংখ্যা এখন ১৫৮টি।
লক্ষ্য তাড়ায় ভারতকে এদিনও উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল। তবে পঞ্চম ওভারের শেষ বলে রোহিতকে (২০) বোল্ড করে ৩১ রানের এই জুটি ভাঙেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। এরপর গিলকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের নিতে শুরু করেন কোহলি।
তবে এক্ষেত্রে অবদান আছে পাকিস্তানেরও। একাদশ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে গিলের সহজ ক্যাচ ছাড়েন খুশদিল শাহ। এরপর দারুণ এক ঘূর্ণি ডেলিভারিতে গিলকে (৪৬) বোল্ড করে ৬৯ রানের এই জুটি ভাঙেন আবরার আহমেদ। তৃতীয় উইকেটে কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারের ১১৪ রানের জুটিতে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় পাকিস্তান। এখানেও আইয়ারের ক্যাচ ছাড়েন বাবর আজম। শেষ পর্যন্ত আইয়ার ফেরেন ৫৬ রান করে।
হার্দিক পান্ডিয়াকে (৮) শাহিন দ্রুত তুলে নিলেও ততক্ষণে বেশ দেরি হয়ে যায়। শেষ দিকে সমীকরণ ছিল রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কোহলির সেঞ্চুরি পূর্ণ করা নিয়ে। জয়ের জন্য ২ রান বাকি থাকা অবস্থায় সেঞ্চুরির জন্য কোহলির দরকার ছিল ৪ রান। পরের বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের ৫১তম শতক পূর্ণ করেন তিনি। ১১১ বলের তার ইনিংসটি সাজান ৭টি চারে।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানকে ভালো শুরুই এনে দেন বাবর। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৩ রানে ডানহাতি এই ব্যাটারের বিদায়ের পর অন্য ব্যাটাররা সেটি আর ধরে রাখতে পারেননি। ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ইমাম-উল-হকও (১০) ফেরেন দ্রুত।
ক্রিজে এসে প্রথম বলে চার মেরে আক্রমণাত্মক শুরুর ইঙ্গিত দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু পাকিস্তান অধিনায়ক তা আর ধরে রাখতে পারেননি। একের পর এক ডট বল খেলে দলের রানের গতি কামিয়ে দেন তিনি।
অপর কিছুটা দ্রুত ব্যাটিং করা শাকিল ফিফটি তুলে নেন ৬৩ বলে। ফিফটির পথে থাকা রিজওয়ান জীবনও পেয়েছিলেন একবার। কিন্তু পরের ওভারেই ৭৭ বলে ৪৬ রান করে বোল্ড হন তিনি। এর আগে তৃতীয় উইকেটে শাকিলের সঙ্গে ১৪৪ বলে গড়েন ১০৪ রানের জুটি।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর সেই ওভারেই জীবন পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি শাকিল। পরের ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হয়ে বাঁহাতি এই ব্যাটার সাজঘরের পথ দেখেন। এক ওভার পর আউট হন তাইব তাহিরও।
দ্রুত তিন উইকেটে হারিয়ে চাপে থাকা দলকে টেনে তুলতে পাল্টা-আক্রমণে দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন সালমান আলী আগা ও খুশদিল। কিন্তু এই জুটি থেকে ৩৫ রানের বেশি আসেনি। শেষ পর্যন্ত খুশদিলের ৩৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনে ৩ উইকেট নেন কুলদীপ যাদব।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: