রবীন্দ্রর সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিতে নিউ জিল্যান্ড

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রবীন্দ্রর সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিতে নিউ জিল্যান্ড

রবীন্দ্রর সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিতে নিউ জিল্যান্ড

 

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যাটারদের একের পর এক ডট বল খাওয়ায় সংগ্রহটা বেশি বড় করতে পারেনি বাংলাদেশ। এরপর পেসাররা শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে সেই রান নিয়েই লড়াই করার আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু রাচিন রবীন্দ্রর ব্যাটিং নৈপুণ্যে তা আর হয়নি। বাঁহাতি এই ব্যাটারের সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেটের জয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে বিদায় করে সেমি-ফাইনালে উঠেছে নিউ জিল্যান্ড।

সোমবার রাওয়ালপিন্ডিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে ২৩৬ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে রবীন্দ্রর ১১২ রানের ওপর ভর করে ২৩ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় কিউইরা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ তাদের পুরো ইনিংসে ১৮১ বলে কোনো রানই নিতে পারেনি। মাইকেল ব্রেসওয়েলের টানা ১০ ওভারের স্পেলে ২৬ রান তুলতে মোট ৪৩টি ডট দেন ব্যাটাররা। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ডানহাতি এই অফস্পিনার ৪ উইকেট শিকার করে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

তবে ম্যাচের ফল ভিন্ন হওয়ারও সম্ভাবনা ছিল। রবীন্দ্রকে সাজঘরে ফেরানোর তিনটি সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশ ফিল্ডাররা।

ছোট লক্ষ্য দিয়ে ম্যাচ জিততে যেমন শুরুর দরকার ছিল বাংলাদেশকে ঠিক তেমনটাই এনে দেন তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা। প্রথম ওভারের শেষ বলে রানের খাতা খোলার আগেই আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান উইল ইয়ংকে বোল্ড করেন তাসকিন। চতুর্থ ওভারে ৫ রান করা কেইন উইলিয়ামসনকে তুলে নিয়ে কিউইদের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দেন নাহিদ।

এরপর দ্বাদশ ওভারে রবীন্দ্রকে সাজঘরের ফেরানোর সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ২৫ রানে থাকা এই ব্যাটারকে রানআউট করার সুযোগ হাতছাড়া করেন তানজিদ হাসান তামিম। সে সময় কিউইদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৫৭ রান।

প্রথম দফায় জীবন পেয়ে তা ভালোভাবেই কাজে লাগান রবীন্দ্র। মুস্তাফিজুর রহমান ডেভন কনওয়েকে (৩০) ফেরানোর পর টম ল্যাথামকে নিয়ে জুটি বেঁধে ম্যাচটি বাংলাদেশের নাগালের বাইরে নিয়ে যান তিনি। চতুর্থ উইকেটে এই দুই বাঁহাতি মিলে যোগ করেন ১২৯ রান।

এর আগেই ব্যক্তিগত ৯৩ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে জীবন পান রবীন্দ্র। এরপর ৯৫ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। সেঞ্চুরির পর শেষ জীবনটি পান ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ১০৫ রানে থাকার সময় মিড-অনে তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। শেষ পর্যন্ত তাকে ফেরান রিশাদ হোসেন। সঙ্গীর বিদায়ের পর সাজঘরের পথ দেখেন ৫৫ রান করা ল্যাথাম।

শেষ পর্যন্ত গ্লেন ফিলিপস (২১) ও ব্রেসওয়েলের (১১) ব্যাটে ৪৬ ওভার ১ বলে লক্ষ্যে পৌঁছায় কিউইরা।

তানজিদ-শান্তর উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৫০ বলে ৪৫ রানএর আগে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের হতাশা ভুলে দলকে ভালো শুরু এনে দেন তানজিদ। কিন্তু এদিনও শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি এই ওপেনার। ২৪ রান করে ব্রেসওয়েলের প্রথম শিকার হয়ে তিনি সাজঘরে ফিরলে ভাঙে শান্তর সঙ্গে ৪৫ রানের উদ্বোধনী জুটিটি।

তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যর্থ হন মিরাজও। নিজের খেলা চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে আগ্রাসী শুরুর ইঙ্গিত দিলেও ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। আগের ম্যাচে শতক হাঁকানো তাওহিদ হৃদয় ক্রিজে থিতু হলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি। ২৪ বলে ৭ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটারকে ফেরান ব্রেসওয়েল।

দলকে হতাশ করেন মুশফিকুর রহিম ও চোট কাটিয়ে দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহও। এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারকেও ফেরান ব্রেসওয়েল। নিজের প্রিয় স্লগ-সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন মুশফিক (২)। এরপর মাহমুদউল্লাহও (৪) বড় শট খেলতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন।

এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে সঙ্গীদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখতে থাকা শান্ত ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি তুলে নেন ৭১ বলে। কিন্তু একের পর এক ডট দিয়ে চাপ বাড়ানোর পর আগ্রাসী হতে গিয়ে ১১০ বলে ৭৭ রান করে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এরপর দ্রুত রান করার চেষ্টা করেন জাকের আলী ও রিশাদ। ২৫ বলে ২৬ রান করে রিশাদ ফেরার পর জাকের ৫৫ বলে ৪৫ রান করে রানআউট হলে আড়াইশ পর্যন্ত যেতে পারেনি বাংলাদেশ।

নিউ জিল্যান্ডের জয়ে ‘এ’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও বাদ পড়েছে আয়োজক পাকিস্তান। অন্যদিকে সেমি-ফাইনালে কিউইদের সঙ্গী হয়েছে ভারত।

[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]

মন্তব্য করুন: