আগামীর জন্য মাহমুদউল্লাহকে সতীর্থদের শুভকামনা
১৩ মার্চ ২০২৫

টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি থেকে অবসরের পর জাতীয় দলের হয়ে কেবল ওয়ানডেতেই খেলছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবার সাদা বলের এই ফরম্যাটকে বিদায় জানিয়ে বাংলাদেশের জার্সিটা চিরতরে তুলে রাখলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। বিদায় বেলায় স্মৃতিচারণ করে তাকে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন সতীর্থরা।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর থেকে নানা আলোচনা-সমালোচনায় থাকা মাহমুদউল্লাহ বুধবার রাতে ফেইসবুকে ১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দেন।
৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের অবসরের ঘোষণায় দীর্ঘদিন পর ফেইসবুকে উপস্থিত হয়ে স্মৃতিচারণ করেন সাকিব আল হাসান।
“রিয়াদ ভাই, আপনার পাশে খেলা এবং আপনার কাছ থেকে শেখা আমার জন্য সৌভাগ্যের। আপনি মাঠে এবং মাঠের বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই উদাহরণ স্থাপন করেছেন এবং আপনার রেকর্ডই কথা বলে। খেলার প্রতি আপনার নিষ্ঠা, সহনশীলতা এবং ভালোবাসার জন্য জাতি আপনার কাছে ঋণী।”
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মাশরাফির বিন মোর্তজার নেতৃত্বে সবচেয়ে বেশি ১১০টি ম্যাচ খেলেন মাহমুদউল্লাহ। সংখ্যা দিয়ে তাকে বিচার করা যাবে না জানিয়ে দেশের ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক ফেইসবুকে লেখেন, “দারুণ এক আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন, রিয়াদ। তোর নামের পাশে যে সংখ্যাগুলো আছে, সেসবের সীমানা ছাড়িয়ে তুই আমাদের কাছে আরও অনেক ওপরে।”
ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান মাহমুদউল্লাহ, ২০১৫ সালের আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের শেষ চারে তুলতে অবদান রাখেন তিনি। এই দুই ইনিংসের কথা স্মরণ করেন মাশরাফি।
“অ্যাডিলেইড আর কার্ডিফে তোর সেঞ্চুরির কথা আজ আবার মনে পড়ছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান, তোর এই অর্জন কেড়ে নিতে পারবে না কেউ। তবে আশা করি, তোকে আদর্শ মেনে বৈশ্বিক আসরে তোর চার সেঞ্চুরির রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে দেশের অনেকে। বড় মঞ্চে তুই যেভাবে নিজের সেরাটা মেলে ধরেছিস, সেই পথ অনুসরণ করবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।”
জাতীয় দলের সতীর্থ হিসেবে শুরু করে পরে পারিবারিকভাবেও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। গত ৫ মার্চ ওয়ানডেকে বিদায় জানানো এই অভিজ্ঞ উইকেটকিপার-ব্যাটার মাহমুদউল্লাহর প্রাপ্তিগুলোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
“আপনার সঙ্গে এত বছর একসঙ্গে মাঠে খেলা সত্যিই বিশাল সম্মানের ব্যাপার ছিল। আপনার দিক নির্দেশনা ও একসঙ্গে গড়া অসংখ্য স্মৃতির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি দেশের জন্য যা কিছু অর্জন করেছেন, তা নিয়ে আমি অসম্ভব গর্বিত। আপনার প্রাপ্য এই অবসর উপভোগ করুন, রিয়াদ ভাই।”
গত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো তামিম ইকবাল ফেইসবুকে লেখেন, “বর্ণিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সফলভাবে সম্পন্ন করায় অভিনন্দন, রিয়াদ ভাই। আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম স্তম্ভ এবং মাঠের ভেতরে ও বাইরে আমাদের অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা যে ড্রেসিং রুমে কাটানো স্মৃতিগুলো সবসময় মনে রাখব।”
“দেশের ক্রিকেটে আপনার অবদানের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আগামীর দিনগুলোর জন্য শুভকামনা।”
২০০৭ সালে মোহাম্মদ আশরাফুলের অধিনায়কত্বে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পথচলা শুরু করা মাহমুদউল্লাহ ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেন নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের বিদায়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জাতীয় দলের টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক।
“রিয়াদ ভাই, বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ ক্রিকেটে আপনার সকল অবদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ড্রেসিং রুমে আপনাকে খুব মিস করব। মাঠের ভেতরে ও বাইরে সবসময় আপনার কাজগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নেব। আপনি আমাদের অনেককে অনুপ্রাণিত করেছেন এবং এটি অনেক দিন ধরে অব্যাহত থাকবে… আপনার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা।”
মন্তব্য করুন: