৩ মাস পর মাঠে ফিরতে পারবেন তামিম
২৫ মার্চ ২০২৫

হার্ট অ্যাটাকের পর দ্রুত চিকিৎসা পাওয়ার পর বর্তমানে সুস্থ আছেন তামিম ইকবাল। অল্প করে হাঁটাচলাও করতে পারছেন দেশসেরা এই ওপেনার। তাকে নিয়ে ঝুঁকি কম থাকলেও এখনও ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পুরোপুরি সেরে উঠতে ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারকে অন্তত তিন মাস বিশ্রামে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এরপরই স্বাভাবিক জীবন ও আবারও মাঠে ফিরতে পারবেন তামিম।
সোমবার সাভারের বিকেএসপিতে মোহামেডানের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচের টস করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। এরপর নিকটস্থ কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়কের হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। সেখানেই অ্যানজিওপ্লাস্টি করে হার্টে স্টেন্ট বা রিং বসানো হয়।
মঙ্গলবার সকালে তামিমকে নিয়ে স্বস্তির সংবাদ দেন হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) দায়িত্বরত চিকিৎসক মনিরুজ্জামান মারুফ। তার তত্ত্বাবধানেই তামিমের হার্টে রিং বসানো হয়।
“তামিম এখন ভালো আছেন। ভালো ব্যাপার হলো, তিনি অল্প অল্প হাঁটাচলা করছেন, হাসিখুশি আছেন। অল্প কিছুক্ষণের জন্য তাকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আবার সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে।”
এরপর দুপুরে তামিমের অবশেষ অবস্থা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তাকে দেখতে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর ও হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী।
এ সময় আবদুল ওয়াদুদ জানান, তামিমের ঝুঁকির শঙ্কা এখন অনেকটাই কমে গেছে। তবে সতর্কতার জন্য আরও তিন দিন কেপিজে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
“আজকে সকালে তার ইকো কার্ডিওগ্রাফ করে হার্টের ফাংশন দেখা হচ্ছিল। দেখে মনে হয়েছে, কোনো সমস্যাই নেই, তরতাজা। মনে রাখতে হবে এটা কিন্তু একটা ছদ্মবেশ। আবারও এবনরমাল বিট হতে পারে। ঝুঁকিটা কিন্তু কম। এক শতাংশেরও কম। কিন্তু যদি হয়ে যায়, তাহলে ওই রোগীর জন্য তো শতভাগ ঝুঁকি। তামিম তো তামিম। আমাদের জাতীয় সম্পদ। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তার (কেপিজে হাসপাতালে) একটু থাকা উচিত। তারপর তিনি মুভ করতে পারবে।”
“ক্ষীণ শঙ্কা আছে সে জন্য আমরা তাকে বলেছি, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত একটা জটিল সময়, যেন আর কোনো সমস্যা না হয়। কথাবার্তা একটু কম বলা উচিত। একটু বিশ্রামে থাকা উচিত। কোনো রকম উত্তেজিত হওয়া উচিত নয়। শুরুর সময়টা এখানে একটু থেকে স্টেবল হয়ে তারপর তার পুনর্বাসনের জন্য ভালো কোনো জায়গায় যেতে চায়, যেতে পারবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক জাফরও জানান একই কথা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তামিমকে কেপিজে হাসপাতালেই রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
“এই মুহূর্তে মুভ করাটা তার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই জিনিসটা তামিম ইকবালের সঙ্গেও আলাপ করেছি। এটাই স্বাভাবিক যে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা যেখানে আছে, সবাই সেখানেই যেতে চাইবে। তবে তার জন্য যাওয়াটা কতটা নিরাপদ, সেটা আলাপ করেছি। যদিও এটা তাদের পারিবারিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে আমাদের চিকিৎসকদের নির্দেশনাকে সম্মানস্বরূপ মেনে না চললে যে আশঙ্কাটা থাকে, সেটা সম্পর্কে আমরা তো আসলে ভবিষ্যৎ বলতে পারব না।”
তামিম কবে নাগাদ নিজের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে পারবেন সে বিষয়ে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক বলেন, “আজকে সময় যাচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত হলো ঝুঁকিপূর্ণ। আর তার (তামিম) স্বাভাবিক কার্যক্রম অর্থাৎ খেলাধুলায় ফিরতে ৩ মাস সময় দিতে হবে। এ ছাড়া উনি বাসায় স্বাভাবিক কাজকর্ম, হাঁটাচলা করবেন। তবে বিশ্রামেই থাকতে হবে।”
মন্তব্য করুন: