টেস্টে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা হয়েই আছে ওপেনিং জুটি

২০ এপ্রিল ২০২৫

টেস্টে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা হয়েই আছে ওপেনিং জুটি

সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার নাম সম্ভবত ওপেনিং। ইনিংসের শুরুতে তামিম ইকবালকে ছাড়া ওপেনারদের দৈন্যদশা যেন আরও প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। শতরানের জুটি তো দূরের কথা, পঞ্চাশ রানের জুটি গড়তেও হিমশিম খাচ্ছে তারা। আর এর প্রভাব পড়ছে দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সেও।

জাতীয় দলের জার্সিতে লাল বলের ক্রিকেটে তামিম সবশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০২৩ সালের এপ্রিল, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টেস্টের প্রথম ইনিংসসহ এই ফরম্যাটে মোট ২৭ ইনিংস খেলেছে বাংলাদেশ। সময় ওপেনিংয়ে তিনটি ভিন্ন জুটি খেলিয়েও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি দল। শতরানের জুটি একটিও নেই। পঞ্চাশ রানের জুটি হয়েছে স্রেফ দুটি।

রোববার সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন মাহমুদুল হাসান জয় সাদমান ইসলাম। উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৩১ রানে, যা গত ১১ ইনিংসের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।

টেস্টে তামিমের সবশেষ ম্যাচের পর অর্থাৎ ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির গড় মাত্র ২১ দশমিক ১১। এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ১২ ইনিংসে ওপেনিং করেন জয় জাকির হাসান জুটি। এই জুটির গড় মাত্র সাড়ে ১৯; সর্বোচ্চ জুটি ৪৭ রানের। অন্যদিকে ইনিংসে জয়-সাদমান জুটির গড় কেবল ১০ দশমিক ৫৭।

এই দুই জুটির তুলনায় সফল বলা যেতে পারে সাদমান-জাকির জুটিকে। তামিমের বিদায়ের পর যে দুটি অর্ধশত রানের জুটি হয়েছে, তা এসেছে তাদের ব্যাট থেকেই। সময় ইনিংসে এই জুটি থেকে আসে ২৪১ রান; গড় ৩৪ দশমিক ৪২। সর্বোচ্চ ৬২ রানের জুটিটি আসে ভারতের বিপক্ষে গত বছর সেপ্টেম্বরে।

সবশেষ শতরানের জুটির ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন জাকিরদলের সবশেষ শতরানের উদ্বোধনী জুটিটি আসে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত জাকিরের জুটি হয়েছিল ১২৪ রান।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত টেস্টে সবচেয়ে সফল ওপেনিং জুটি জিম্বাবুয়ের। ইনিংসে ৪৪ দশমিক ৬২ গড়ে তারা ৩৫৭ রান তুলেছে, সর্বোচ্চ ৯৭ রান। তালিকায় পরের স্থানে থাকা ভারত ৩৮ ইনিংসে ৪৩ দশমিক ৮৬ গড়ে তুলেছে হাজার ৬২৩ রান। ৪০ ইনিংস খেলে তিনে থাকা অস্ট্রেলিয়ার গড় ৩৬ দশমিক ৭৫। তাদের রান হাজার ৩৬০।

এই তালিকায় বাংলাদেশের নিচে আছে তিনটি দলনিউ জিল্যান্ড, আফগানিস্তান আয়ারল্যান্ড। এই সময়ের মধ্যে ২৮ ইনিংস খেলা কিউই ওপেনিং জুটির গড় ২১ দশমিক ১০।

ওপেনারদের টানা ব্যর্থতার প্রভাব নিয়মিতই পড়ছে দলের ব্যাটিংয়ে, যা শেষ পর্যন্ত প্রভাব ফেলছে দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে। ওপেনার হিসেবে খেলা ব্যাটারদের ব্যক্তিগত গড়ও ভালো নয়।

বর্তমানে খেলা ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন সাদমান। ২০১৮ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ২০ ম্যাচে ৩৯ ইনিংস খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটার প্রায় ২৫ গড়ে রান করেছেন ৯২৩। 

অন্যদিকে ২০২১ সালে অভিষিক্ত হওয়া জয় এখন পর্যন্ত ১৭টি ম্যাচে খেলেছেন ৩২ ইনিংস। নিজের তৃতীয় টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে শতক হাঁকানো ডানহাতি এই ব্যাটার ২২ দশমিক ৭৫ গড়ে ৭২৮ রান করেছেন। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরের পথ দেখেছেন ইনিংসে।

জাকির এখন পর্যন্ত খেলেছেন ১৩ ম্যাচ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তা আর ধরে রাখতে পারেননি। ২৩ দশমিক ৭২ গড়ে তার রান ৫৯৩।

মন্তব্য করুন: