হৃদয়কে আবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আপত্তি তামিমের
২৫ এপ্রিল ২০২৫

তাওহিদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে গত কয়েকদিন ধরেই সরগরম দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আম্পায়ারের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য ও পরে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করার কারণে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলেন মোহামেডানের এই ক্রিকেটার। কিন্তু এক ম্যাচ পরেই নিয়ম ভেঙে তাকে খেলার অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড( বিসিবি)। তবে এই ঘটনা সমালোচনার জন্ম দেওয়ায় পরে হৃদয়ের পুরোনো শাস্তি বহাল রাখে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু হৃদয়কে আবার শাস্তি দেওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না তামিম ইকবাল।
শুক্রবার হৃদয় ইস্যুতে বিসিবি কার্যালয়ে সভাপতি ফারুক আহমেদসহ কয়েকজন বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে তামিমের নেতৃত্বে আলোচনায় বসেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। সেখানে হৃদয়ের শাস্তির বিষয়টি ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে বোর্ডের কাছে নিজদের অসন্তুষ্টির কথা তুলে ধরেন ওই ক্রিকেটাররা।
আলোচনা শেষে সংবাদ সম্মেলনে হৃদয়ের ব্যাপারে তামিম বলেন, “প্রথমে যখন দুটি ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি যে, সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল। এটা নিয়ে কিন্তু কেউ আমরা কোনো সময় কথা বলি নাই।”
“তার কিছুদিন পর দেখলাম যে, দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ (নিষেধাজ্ঞা) করা হলো, এটা বিসিবি করেছে। এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর সে দুইটা ম্যাচ খেললো। মূলত সে কিন্তু ওর যে শাস্তিটা ছিল তা ভোগ করে নিয়েছে। এখন দুইটা ম্যাচ খেলার পর কালকে শুনলাম তাকে আবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হইছে। এটা কোন নিয়মে, কোন দিক দিয়ে কীভাবে করছে এটা আমার কাছে জানা নাই। এই পুরো জিনিসটাই হাস্যকর ছিল। এটা কোনোভাবেই নিষিদ্ধ হতে পারে না।”
ডিপিএলের মাঝপথে হার্ট অ্যাটাক করে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান মোহামেডান অধিনায়ক তামিম। তার অবর্তমানে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় হৃদয়কে। তার শাস্তি কমানোর বিষয়ে দেশের বেশ কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মোহামেডানের চাপের কাছে নতি শিকার করে হৃদয়ের শাস্তি কমায় বিসিবি।
বিষয়টি নিয়ে তামিমের কাছে জানতে চাওয়া হলে জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, “মোহামেডান থেকে চাপ দিয়ে খেলানো হয়েছে কী হয় নাই, এ কথাটা গুরুত্বপূর্ণ না। তাকে কি বিসিবি খেলতে অনুমতি দিয়েছিল? যদি বিসিবি অনুমতি দেয় তার মানে সে তার শাস্তি ভোগ করেছে। যে ছেলে একবার তার শাস্তি ভোগ করে নেয়, দুইটা ম্যাচ খেলার পর ওকে আপনি একই অপরাধের জন্য আবার কীভাবে শাস্তি দিতে পারেন। এই বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা বুঝিয়েছি আমরা কী ফিল করি। তারাও তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
গত ১২ এপ্রিল মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় তাদের সঙ্গে তর্কে জড়ান মোহামেডানের ক্রিকেটাররা। এ সময় দেশের একমাত্র আইসিসি এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর পাশাপাশি অসদাচরণ করেন হৃদয়। এই পুরো ঘটনায় বিসিবির আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে তাকে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হৃদয় বলেন, “ঘটনা যদি অন্যদিকে যায় আমি মুখ খুলব।”
সংবাদ সম্মেলনে পুরো বক্তব্যের কারণে ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারকে আরও এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী সুপার লিগের প্রথম দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকার কথা ছিল তার। কিন্তু এক ম্যাচ পরই গত ২০ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে মোহামেডানের নেতৃত্ব দিতে মাঠে নামেন হৃদয়।
মন্তব্য করুন: