তাইজুল-নাঈমের স্পিনে জিম্বাবুয়েকে অলআউটের পথে বাংলাদেশ
২৮ এপ্রিল ২০২৫

নিক ওয়েলচ ও শন উইলিয়ামসের দৃঢ়তায় দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষে ভালো অবস্থানেই ছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু চা বিরতির পর ক্র্যাম্প নিয়ে ওয়েলচ মাঠ ছাড়তেই যেন সেই প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। নাঈম হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটিং-অর্ডার গুঁড়িয়ে দিতে শুরু করলেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের নৈপুণ্যে ভালো অবস্থানে থেকে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ।
সোমবার চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ২২৭ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে।
ক্যারিয়ারে ১৬তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। তার ও নাঈমের ঘূর্ণিতে শেষ সেশনে ৩৪ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে ৭ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ।
সিরিজে ফিরতে এদিন একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সাদা পোশাকের ১০৭তম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক হয় তানজিম হাসান সাকিবের। ওপেনিংয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। স্পিনে শক্তি বাড়াতে নাহিদ রানার জায়গায় আসেন নাঈম। বাদ পড়েন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও পেসার খালেদ আহমেদ।
আগের টেস্টের মতো এদিনও জিম্বাবুয়েকে ভালো শুরু এনে দেন ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারেন। তবে ইনিংসের একাদশ ওভারে বেনেটকে কট বিহাইন্ড করিয়ে ৪১ রানের জুটিটি ভাঙেন তানজিম। অবশ্য এই জুটি আরও আগেই থামতে পারত। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের করা অষ্টম ওভারে স্লিপে কারেনের ক্যাচ ছাড়েন সাদমান ইসলাম। এরপর ১৯তম ওভারে আক্রমণে এসেই দ্বিতীয় বলে ২১ রান করা কারেনের স্টাম্প ভাঙেন তাইজুল।
ভালো শুরু পেলেও মধ্যাহ্ন ভোজের পরের গল্পটা কেবল হতাশারই ছিল বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের বিবর্ণ বোলিংয়ে ২৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে দলের খাতায় ৭২ রান যোগ করেন ওয়েলচ ও উইলিয়ামস। অবশ্য সেশনের শুরুর দিকে এই জুটি ভাঙার সুযোগ এসেছিল স্বাগতিকদের। ৩৩তম ওভারের শেষ বলে ব্যাটারদের ভুল বোঝাবুঝিতে উইলিয়ামসকে রান আউটের সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সাদমান ইসলাম বোলিং প্রান্তে থ্রো না করে করেন উইকেটকিপারের কাছে। পরে জাকের আলীর দুর্বল থ্রো বোলার তাইজুলের কাছে ঠিকমতো পৌঁছেনি।
১০৭ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন ওয়েলচ। অপর প্রান্তে টানা দ্বিতীয় টেস্টে ফিফটি পান উইলিয়ামস।
চা বিরতির পর তৃতীয় বলে ক্র্যাম্প নিয়ে মাঠ ছাড়েন ৫৪ রান করা ওয়েলচ। শেষ হয় উইলিয়ামসের সঙ্গে ৯০ রানের জুটিট। এরপরই ম্যাচে ফিরতে শুরু করে বাংলাদেশ, যার শুরুটা করেন নাঈম। পরপর দুই ওভারে এই অফ-স্পিনার তুলে নেন ক্রেইগ আরভিন (৫) ও ৬৭ রান করা উইলিয়ামসকে। এরপরের গল্পটা শুধুই তাইজুলের।
বাঁহাতি এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে একে একে সাজঘরে ফিরতে থাকেন লোয়ার-অর্ডার ও টেইলএন্ডারের ব্যাটাররা। দারুণ এক ডেলিভারিতে ওয়েসলি মাধেভেরেকে (১৫) কট বিহাইন্ড করান তিনি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে (৬) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলানোর পর রিচার্ড এনগারাভাকে বোল্ড করে ৮১তম ওভারে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান ৩৩ বছর বয়সী এই স্পিনার। কিন্তু তা আর হয়নি।
অষ্টম উইকেটের পতনের পর আবারও ক্রিজে আসেন ওয়েলচ। কিন্তু দুই বলের বেশি তিনি টিকতে পারেননি। ৫৪ রান করা এই ব্যাটারকে বোল্ডকে পঞ্চম শিকারটি ধরেন তাইজুল। শেষ উইকেটে টাফাদওয়া সিগা (১৮*) ও ব্লেসিং মুজারাবানির (২*) দৃঢ়তায় অলআউট না হয়ে দিনের খেলা শেষ করে জিম্বাবুয়ে।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: