মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়েকে গুঁড়িয়ে সমতায় বাংলাদেশ
৩০ এপ্রিল ২০২৫

টেইলএন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে শতক হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে দুইশ রানের বেশি লিড এনে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর সঙ্গীদের নিয়ে স্পিন জাদুতে জিম্বাবুয়েকে দিলেন গুঁড়িয়ে। ইনিংস ও ১০৬ রানের জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ সমতায় শেষ করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বুধবার চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীদের ইনিংসের স্থায়িত্ব ছিল ৪৬ ওভার ২ বল। টানা ২১ ওভারের বোলিংয়ে তাদের মিডল-অর্ডার গুঁড়িয়ে দেওয়া মিরাজের শিকার ৫ উইকেট। ম্যাচসেরার পাশাপাশি সিরিজসেরাও হয়েছেন তিনি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে বাংলাদেশের জয় এটি। ২০২০ সালের জিম্বাবুয়ের সবশেষ বাংলাদেশ সফরেও ইনিংস ও ১০৬ রানে জিতেছিল স্বাগতিকরা।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পর ঘরের মাঠে প্রথম টেস্ট জিতল বাংলাদেশ। সেবার সিলেটে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল শান্তর দল। এরপর মাঝের ছয়টি টেস্টের সবকটিতে হেরেছিল তারা।
এর আগে ডানহাতি এই ব্যাটারের ১০৪ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে দ্বিতীয় সেশনে ৪৪৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা লিড পায় ২১৭ রানের।
জিম্বাবুয়ে ইনিংসের শুরুতেই এক প্রান্তে আক্রমণে আসেন তাইজুল ইসলাম। ফলও আসে দ্রুত। ষষ্ঠ ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট শিকার এই স্পিনার। ওভারের প্রথম বলে স্লিপে ব্রায়ান বেনেটের (৬) দারুণ এক ক্যাচ নেন সাদমান ইসলাম। এক বল পর নিক ওয়েলচকে (০) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল।
২ উইকেটে ১৭ রান নিয়ে তৃতীয় সেশনে খেলতে নামার পর আঘাত হানেন নাঈম হাসান। প্রথম ইনিংসে ফিফটি হাঁকানো শন উইলিয়ামসকে (৭) তুলে নেন এই অফস্পিনার। স্লিপে আরেকটি দারুণ ক্যাচ নেন সাদমান।
এরপরের গল্পটা শুধুই মিরাজময়। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে (২৫) বোল্ড করে চতুর্থ উইকেটে ৩৭ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। এরপর ওভারের শেষ বলে এই অফস্পিনার এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ওয়েসলি মাধেভেরেকে (০)। নিজের পরের ওভারে টাফাদওয়া টিগাকেও তুলে নেন তিনি।
ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ফেরানোর পর জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো বেন কারেনকে (৪৬) কট বিহাইন্ড করিয়ে ক্যারিয়ারে ১৩তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেন মিরাজ। সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এই স্পিনার।
তাইজুলের বলে নবম উইকেটের পতনের পর বাংলাদেশের জয় বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিনসেন্ট মাসেকেসা। কিন্তু সরাসরি থ্রোতে দ্রুত রান নিতে যাওয়া মাসেকেসাকে রানআউট করে তৃতীয় দিনেই জয় এনে দেন মুমিনুল হক।
আগের দিনের শেষ বিকেলে দ্রুত চার উইকেট হারানোয় বড় লিডের আশা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। কিন্তু এদিন সকালে তাইজুল ও তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে দুটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়ে দলকে বড় লিড এনে দেন মিরাজ। অবশ্য এক্ষেত্রে অবদান আছে জিম্বাবুয়ের উইকেটকিপারেরও। দিনের দ্বিতীয় ওভারের মিরাজের ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করতে ব্যর্থ হন তিনি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অষ্টম উইকেটে তাইজুলের সঙ্গে ৬৩ ও নবম উইকেটে তানজিমের সঙ্গে ৯৬ রানের জুটি গড়েন মিরাজ।
তাইজুল ২০ ও তানজিম ৪১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে মাসেকেসার বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে শেষ ব্যাটার হিসেবে স্টাম্পিং হন মিরাজ। থামে তার ১৬২ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২২৭ রানে।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: