‘খাদের কিনারা থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই করে ফিলিস্তিনিরা’
৩০ জানুয়ারি ২০২৪
এএফসি এশিয়ান কাপে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম ম্যাচ জিতে নকআউট পর্বে পা রেখেছিল ফিলিস্তিন। কাতারের বিপক্ষে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে আরও একটি ইতিহাস গড়ার খুব কাছে গিয়েও তাদের ফিরে আসতে হয়েছে খালি হাতে। তবে স্বাগতিকদের কাছে হেরে আসর থেকে বিদায় নিলেও ফিলিস্তিনিদের পারফরমেন্সে গর্বিত দলের কোচ থেকে শুরু করে সমর্থকরা।
সোমবার ৬৪ হাজার দর্শকের সমাগমে পূর্ণ ছিল কাতারের আল বাইত স্টেডিয়াম। কিন্তু ম্যাচে কোন দল স্বাগতিক আর কোন দল প্রতিপক্ষ তা বোঝা যেন বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল। কেননা, সমর্থনের দিক দিয়ে স্বাগতিক কাতারের চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিল ফিলিস্তিন। ম্যাচ শুরুর আগে ইসরায়েলের হামলায় হতাহত গাজাবাসীদের স্মরণে এক মিনিটের নিরবতা পালন করে দুই দল। শোনা যায় গ্যালারিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে ওঠা মুহুর্মুহু স্লোগানও।
ম্যাচের শুরু থেকেই কাতারের ওপর চড়াও হয় ফিলিস্তিনিরা। তবে ফল পেতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে অপেক্ষা করতে হয় ৩৭ মিনিট পর্যন্ত। আগের ম্যাচে জোড়া গোল করা ওদায় দাবাগ বল জালে জড়ালে এগিয়ে যায় তারা। তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে স্বাগতিকরা সমতায় ফেরে। বিরতির পরই পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়িয়ে কাতারকে এগিয়ে দেন আকরাম আফিফ। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে কাতার।
শেষ আটে ওঠার ইতিহাস গড়তে না পারলেও দলের পারফরমেন্স নিয়ে দারুণ গর্বিত ফিলিস্তিন কোচ মাকরাম দাবুব ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমার খেলোয়াড়েরা নিজেদের উজাড় করে দিয়ে খেলেছে। শুরু থেকে তারা প্রতিপক্ষকে খুব একটা সুযোগ দেয়নি।”
মাঠের পারফরমেন্স দিয়ে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের শিকার দেশবাসীকে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দিতে পেরেছেন ফুটবলাররা। খেলোয়াড়রাও যে এই সব পরিস্থিতি পার করে এসেছেন তা মনে করিয়ে দিয়ে কোচ বলেন, “তারা (খেলোয়াড়েরা) অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে। কিন্তু এরপরও ফিলিস্তিনিদের জন্য দারুণ কিছু করে দেখাতে সক্ষম হয়েছে। তাদের কাছে এর চেয়ে বেশি আমি চাইতে পারি না। তারা ফিলিস্তিনের ফুটবল এবং ফিলিস্তিনের মানুষকে সম্মানিত করেছে। তারাই আমার চ্যাম্পিয়ন।”
শুধু তাই নয়, কাতারে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরাও নিজ দলের এমন পারফরমেন্সে গর্বিত। এক ফিলিস্তিনি নাগরিক ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, “তারা যদি কোনো ম্যাচ না জিতত কিংবা কোনো গোলও না করত, তবু আমরা তাদের নিয়ে গর্বিত হতাম। আমরা দেখিয়েছি, কোনো কিছুই আমাদের ভাঙতে পারবে না। এমনকি যখন আমাদের খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হয়, সেখান থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়ে আমরা লড়াই করি।”
মন্তব্য করুন: