৯ বছরের কারাদণ্ড দাবি
আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার ব্রাজিল তারকা আলভেসের
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
আদালতে এভাবেই বসিয়ে রাখা হয় ব্রাজিল তারকা আলভেসকে। ছবি : গেটি ইমেজেস
ধর্ষণের অভিযোগে বড় শাস্তির মুখে ব্রাজিল তারকা দানি আলভেস। বছরখানেক আগে বার্সেলোনার পানশালায় এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বিচারকার্য শেষ হয়েছে। এখন শুধু রায় ঘোষণার অপেক্ষা। শুরু থেকেই তিনি ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিলেন। গত বুধবার বিচারের শেষ দিনেও তিনি আদালতের সামনে তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর বার্সেলোনার 'সাটন' নামে একটি পানশালার ভিআইপি সেকশনের বাথরুমে আলভেস এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই তরুণী পুলিশে অভিযোগ করার তিন সপ্তাহ পর আলভেসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকেই তিনি জেলে আছেন। বুধবার তাকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে আনা হয়েছিল। বেশিরভাগ সময় মাথা নিচু করে বসেছিলেন তিনি। আত্মপক্ষ সমর্থনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বার্সা, পিএসজি ও জুভেন্টাসের সাবেক এই ডিফেন্ডার বলেন, “আমি হিংস্র প্রকৃতির মানুষ নই।”
শুধু তাই নয়, সেই তরুণীকে চুল টেনে ধরে শারীরিক নির্যাতন করার বিষয়টিও অস্বীকার করেন আলভেস। আদালতে উপস্থিত আলভেসের স্ত্রী জোয়ানা সাঞ্জ বলেছেন, সে রাতে আলভেস একদম মাতাল অবস্থায় বাসায় ফিরেছিলেন। তার শরীর থেকে অ্যালকোহলের গন্ধ আসছিল। শয়নকক্ষে ঢোকার পর তিনি বেশ কয়েকটি আসবাবের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। আলভেস কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না বলে সাঞ্জ সে রাতে তার কাছ থেকে কিছু জানতে চাননি।
স্পেনের কৌসুলিরা অভিযোগ করেন যে, সেই রাতে আলভেস এবং তার বন্ধু ব্রুনো ব্রাসিল তিনজন তরুণীর জন্য শ্যাম্পেন কিনেছিলেন। সেই তিন তরুণীর মধ্যে একজনকে আলভেস তার সঙ্গে অন্যদিকে যেতে বলেন। আলভেসের কথায় রাজি হয়ে মেয়েটি তার সঙ্গে যান। সেখানে যে একটি বাথরুম ছিল, সেটা মেয়েটির জানা ছিল না। বাথরুমে ঢুকতেই আলভেস দেখান তার হিংস্র রূপ। মেয়েটি বারবার চলে যেতে চাইলেও আলভেস তাকে শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করেন।
অবশ্য শুরু থেকেই ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন আলভেস। এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি এই তরুণীকে চেনেন না। তবে পরবর্তী সময়ে তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন যে, ওই তরুণীর সঙ্গে তিনি যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। একইসঙ্গে জানান যে, স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাবে- এমন শঙ্কায় তিনি শুরুতে মিথ্যা বলেছিলেন। আলভেসের দাবি ছিল, সেই তরুণী স্বেচ্ছায় তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন।
ধর্ষণের শিকার সেই তরুণী এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছেন বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা একজন মনোবিজ্ঞানী। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিচারকার্য চলাকালীন সময়ে পর্দার আড়াল থেকে সাক্ষ্য দেন সেই তরুণী। ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রাখতেই এই ব্যবস্থা। স্পেনের কৌঁসুলিরা আলভেসের ৯ বছর কারাদণ্ড দাবি করেছেন। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আদালত চূড়ান্ত রায় দিতে পারেন বলে ধারণা করছে স্পেনের গণমাধ্যমগুলো।
মন্তব্য করুন: