এই মুহূর্তের স্বপ্ন আমি সবসময় দেখেছি : মেসি
২৫ মার্চ ২০২৩
মুনমেন্তাল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ৮০ হাজার দর্শকের বুনো উল্লাস। চোখের সামনে মাঠের সবুজে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্টিনার রূপকথার নায়করা যে ঘুরছেন! যেন উড়ছেন। সবাই মিলে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের কী পাগলপারা উদযাপন!
আবেগে থরথর সেই অলৌকিক রাত আরও অর্থবহ হয়ে ওঠে মেসির আনন্দ অশ্রুতে। তাঁর সম্মোহনী উচ্চারণে। ক্যারিয়ারে, জীবনে কত কতই তো প্রাপ্তি এই ফুটবল জাদুকরের। কিন্তু বিশ্বকাপ, ছোট্ট ওই সোনালী ট্রফির মূল্য যে তাঁর কাছে কতটা, সেটাই আরেকবার জানালেন মেসি।
বিশ্বকাপ জয়ের পর পানামার বিপক্ষে এই ম্যাচেই প্রথমবারের মতো খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। নিজ দেশে। নিজেদের সমর্থকদের সামনে। উন্মাদনা তাই তুঙ্গে ছিল। প্রতিপক্ষ দুর্বল হলেও স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। বিশ্বকাপজয়ীদের বরণ করে নেয়া বলে কথা!
উৎসবের আতশবাজি আর সমর্থকদের জয়ধ্বনি যেন ছড়িয়ে পড়ে কংক্রিটের স্টেডিয়াম ছাপিয়ে গোটা আর্জেন্টিনায়। পুরো পৃথিবীতে।
ম্যাচে আর্জেন্টিনা জিতেছে। কিন্তু এত বড় উপলক্ষের মুহূর্তে সে ফলটা গৌন। মেসির পেশাদার ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোল তাঁর অবিশ্বাস্য প্রতিভার আরেক মাইলফলক হলেও বিশ্বকাপ জয়ের উদযাপনটাই মুখ্য। আর্জেন্টিনা দলের প্রত্যেকে বিশ্বকাপ ট্রফির রেপ্লিকা নিয়ে কী খ্যাপাটে উৎসবেই না রঙিন হয়ে ওঠেন!
এরপর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মেসির সেই হৃদয়ছোঁয়া কথামালা। যেন চন্দ্রাহতের মতো বলে চলেন তিনি, ‘এই মুহূর্তের স্বপ্ন আমি সবসময় দেখেছি। আপনাদের সঙ্গে বিশ্বকাপ জয় উদযাপনের। আমার দেশে এসে। আর্জেন্টিনায় এসে। কোপা আমেরিকা, ফিনালিস্সিমো এবং সবচেয়ে বড় অর্জন এই বিশ্বকাপ। আমাদের সমর্থন দেবার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। ’
বিশ্বকাপ জয়টা যে খুব সহজে হয়নি, সেটি ভুলে যাননি মেসি। তাই তো পুরনো সব সতীর্থদেরও স্মরণ করেছেন তিনি, ‘আমি জানি, আজ আমাদের দিন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা এখানে উৎসব করছি। কিন্তু এই মুহূর্তেও আগের সতীর্থদের ভুলে যেতে চাই না, যাঁরা এই শিরোপার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করেছিল। আর্জেন্টাইন জনগণের ভালোবাসা তাঁদেরও প্রাপ্য। কারণ জাতীয় দলের এই জার্সির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ তাঁরাও করেছেন।’
এখনকার কোচ লিওনেল স্কালোনি তো রয়েছেনই। আগের সব কোচকেও ধন্যবাদ জানান মেসি।
৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। আবার জিতবে কবে? কবে জাতীয় দলের জার্সিতে যোগ হবে চতুর্থ তারকা? হয়তো তিন বছর পরই কিংবা সাত অথবা এগারো। হতে পারে আরও বেশি।
অত দূরের কথা এখনই না ভেবে মেসির তাই ওই বর্তমানকে উপভোগের মন্ত্র, ‘চলুন, জার্সির এই তৃতীয় তারকাটি সবাই মিলে উদযাপন করি।’
মন্তব্য করুন: