হ্যারি কেইন কি ব্রাজিলের সক্রেটিস?

হ্যারি কেইন কি ব্রাজিলের সক্রেটিস?

১৫ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে গোল করেছেন চারশরও বেশি। গড়েছেন বহু রেকর্ডও। এত কিছুর পরেও এখন পর্যন্ত একটি শিরোপাও জিততে পারেননি হ্যারি কেইন। ট্রফি জয়ের স্বপ্নে চলতি মৌসুমের শুরুতে দীর্ঘদিনের ক্লাব টটনাম হটস্পার ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখে পাড়ি জমিয়েছিলেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। কিন্তু সেখানেও মৌসুম শেষ করতে হচ্ছে খালি হাতেই। 

কেইনের মতোই দীর্ঘ ক্যারিয়ারের শীর্ষ পর্যায়ে একটি ট্রফির জন্য দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হয়েছিল ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি সক্রেটিসকে। সেই আক্ষেপ নিয়েই ২০১১ সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি।

১৬ বছরের ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে পাঁচশরও বেশি ম্যাচ খেলেন সক্রেটিস। ব্রাজিল জাতীয় দলে খেলেন ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত। সেলেসাওদের হয়ে ৬০ ম্যাচে করেন ২২ গোল। তার নেতৃত্বে ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে অংশ নেয় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

১৯৭৩ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোতাফোগো দিয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করে ১৯৮৯ সালে একই ক্লাবে ক্যারিয়ার শেষ করেন সক্রেটিস। মাঝে খেলেছেন করিন্থিয়ানস, ফ্ল্যামেঙ্গো সান্তোসে। কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে এই মিডফিল্ডার একটিও ট্রফি জিততে পারেননি। বোতাফোগো, করিন্থিয়ানস ফ্ল্যামেঙ্গোর হয়ে কিছু ট্রফি জিতলেও সেসব ছিল আঞ্চলিক। জাতীয় দলের হয়ে তার সর্বোচ্চ সাফল্য ১৯৮৩ সালের কোপা আমেরিকায় রানার্স-আপ।

শীর্ষ পর্যায়ে ট্রফির আক্ষেপ থাকলেও ২০০৪ সালের মার্চে আরেক ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের বিশ্বসেরা জীবিত ১০০ ফুটবলারের তালিকায় জায়গা পান সক্রেটিস।

অন্যদিকে ২০০৯ সালে শুরু করা পেশাদার ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় টটনামে কাটান কেইন। প্রতি মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে থাকতেন শীর্ষ গোলদাতাদের তালিকার প্রথম দিকেই। কিন্তু দলকে একবারও জেতাতে পারেননি প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। দুবার ফুটবল লিগ কাপ একবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে গেলেও ফেরেন খালি হাতেই। ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়ে সবশেষ ইউরোর ফাইনালে তুললেও সেখানেও রানার্স-আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কেইনকে।

১৫ বছরের ক্যারিয়ারের অধরা ট্রফির খোঁজে টটনামের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাকি থাকতেই চলতি মৌসুমে বায়ার্নে যোগ দেন এই ইংলিশ স্ট্রাইকার। সব প্রতিযোগিতামূলক আসর মিলিয়ে এক মৌসুমে নিজের সর্বোচ্চ ৪৪ গোল করেও কেইনকে থাকতে হলো খালি হাতেই।

টানা ১১ বছর বুন্ডেসলিগার শিরোপা নিজেদের করে রাখা বায়ার্ন এবার রাজত্ব হারায় বায়ার লেভারকুজেনের কাছে। জার্মান কাপের যাত্রা শেষ হয় দ্বিতীয় রাউন্ডে। ফাইনাল হেরে জার্মান সুপার কাপের শিরোপাও হাত ছাড়া করে। সবশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগেও রিয়াল মাদ্রিদের কাছে সেমি-ফাইনালে হেরে সেখান থেকেও খালি হাতে ফেরত আসতে হয়েছে কেইনের দলকে। 

তবে সক্রেটিস না পারলেও কেইনের সামনে এখনও ট্রফি জয়ের সুযোগ আছে। আসছে জুনে জার্মানিতে বসবে এবারের ইউরোর আসর। কেইন হয়তো চাইবেন গতবার যা পারেননি এবার তা করে দেখাতে। দলকে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরা করতে। কিন্তু ক্যারিয়ার শেষে এই ইংলিশ তারকা কোনো শিরোপার স্বাদ পাবেন কি না তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।

মন্তব্য করুন: