বাফুফের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে বিপাকে কৃষ্ণা

বাফুফের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে বিপাকে কৃষ্ণা

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনেছেন সাফজয়ী ফুটবলারা কৃষ্ণা রানী সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই কৃষ্ণা চোটের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন। পুরোপুরি সুস্থ হতে না পারায় জাতীয় দলের বাইরে চলে গেছেন। চীনা তাইপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ দলে তার নাম নেই। এমতাবস্থায় বাফুফের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে বেশ বিপাকেই পড়েছেন কৃষ্ণা।

ফেইসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে কৃষ্ণা লিখেছেন, প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগের থেকে ভালো, কিন্তু এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফের ফিজিও দিয়ে আমার চিকিৎসা চলছে। সবাই জানে ইনজুরিটা অনেক জটিল। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেক দিন দেখেন, যখন ব্যথা কমছিল না। স্যার বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া-ভারত গিয়ে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফেকে জানাই, তারা বলেছিল আর কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেক দিন তাদের বলেছি ভারতে যাওয়ার কথা। কিন্তু ওনারা আমার কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি। আজ পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।

২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়র জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনো কোনো দলের বাইরে থাকতে হয়নি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়ব, কখনো ভাবিনি। অনেক দিন রেস্টে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি।

চীনে যখন এশিয়ান গেমস খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটিয়েছি। ব্যাক টু ব্যাক দুটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক। কষ্ট একটাই, কখনো কোনো টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচকে বলতে শুনলাম না কৃষ্ণা ইনজুরিতে, তাকে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করানো হোক। কারও কোনো মাথাব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমেষে শেষ। অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশি দিন নেই কৃষ্ণার জন্য। সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি।

কৃষ্ণার এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, কৃষ্ণা এমন কথা ফেসবুকে কীভাবে লেখে? এটা খুবই দুঃখজনক। ওর চিকিৎসা চলছে। আমরাই দেশে ওর চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করছি। .... তাকে বলা হয়েছে, ভারতে চিকিৎসার খরচ বাফুফেই দেবে। এখন এক দিন পরই কৃষ্ণা এই স্ট্যাটাস দিয়ে খুবই অন্যায় করেছে।... কারণ দর্শানোর নোটিশ হয়তো আমরা ওকে দেব। ওকে এই স্ট্যাটাসের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে হবে।

মন্তব্য করুন: