অনেক রেকর্ড গড়ে সবচেয়ে বড়টির দ্বারপ্রান্তে ইয়ামাল
১৩ জুলাই ২০২৪
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে (ইউরো) স্পেনের হয়ে মাঠে নেমেই লামিনে ইয়ামাল এমন সব রেকর্ড গড়েছেন যা ভাঙা বেশ কঠিন বলা চলে। ফাইনালে নিশ্চিতভাবেই ভাঙতে যাচ্ছেন আরও একটি রেকর্ড। তবে ইয়ামালের সবচেয়ে বড় রেকর্ডটি হবে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিততে পারলে।
শনিবার ১৭ বছর বয়সে পা দেওয়া ইয়ামালের ক্যারিয়ারের শুরুটা জাঁকজমকপূর্ণ হলেও বেড়ে ওঠাটা সুখকর ছিল না। স্পেনের কাতালুনিয়ার মারাতো শহরের দুই অভিবাসী মা-বাবার ঘরে জন্ম নেন ইয়ামাল। বাবা মরক্কোর নাগরিক আর মা একুয়েটরিয়াল গিনির।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয় শিশু ইয়ামালকে লিওনেল মেসির গোসল করিয়ে দেওয়ার ছবিটি। ২০০৭ সালে এক দাতব্য অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ফটোশুটের জন্য র্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করে ইউনিসেফ। বিজয়ীরা সুযোগ পাবে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে ছবি তোলার। ইয়ামালের পরিবার সেই ড্রয়ে জিতলেও তারা জানত না যে সেই খেলোয়াড় হচ্ছেন মেসি।
তিন বছর বয়সে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হলে মায়ের সঙ্গে লা তোরেতা শহরে থাকতে শুরু করেন ইয়ামাল। সেখানের এক ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি করানো হলে তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয় বার্সেলোনার বিখ্যাত লা মেসিয়া একাডেমি। এই একাডেমি থেকেই উঠে এসে বিশ্ব মাতিয়েছেন মেসি, ইনিয়েস্তা ও শাবি এরনান্দেসসহ আরও অনেক ফুটবলার। বার্সেলোনার বয়সভিত্তিক দলে নিজের দ্বিতীয় বছরে ৩০ ম্যাচে ৫৬ গোল করেন ইয়ামাল। এরপর ১৫ বছর বয়সে বার্সালোনা মূল দলের সঙ্গে তাকে অনুশীলনের জন্য ডাকেন কোচ শাভি।
সেখান থেকে শুরু একের পর এক রেকর্ড গড়া। ২০২৩ সালের ২৯ এপ্রিল ১৫ বছর ২৯০ দিন বয়সে বার্সেলোনার সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে লা লিগায় অভিষেক হয় ইয়ামালের। একই বছর ৮ অক্টোবর গ্রানাদার বিপক্ষে ম্যাচে ১৬ বছর ৮৭ দিন বয়সে গোল করে হন লা লিগার সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা।
১৬ বছর ৮৩ দিন বয়সে সবচেয়ে কম বয়সে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম একাদশে মাঠে নামেন ইয়ামাল। এখন পর্যন্ত ক্লাব ফুটবলে ইউরোপ সেরার আসরে গোল না করতে পারলেও ১৬ বছর ১৫৩ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গোলে সহায়তা করেন তিনি।
এতো গেল ক্লাব পর্যায়ে বার্সেলোনার হয়ে ইয়ামালের করা কিছু রেকর্ড। স্পেনের হয়েও মাঠে নেমে বেশি কিছু রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ১৬ বছর ৫৭ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় এই ফরোয়ার্ডের। ইউরোর বাছাই পর্বে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই সবচেয়ে কম বয়সে স্পেনের হয়ে গোল করেন তিনি, যা কি না বার্সেলোনার হয়ে গোল করারও আগে।
এরপর ১৬ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে ইউরোর সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে স্পেনের হয়ে মাঠে নামেন ইয়ামাল। সেই ম্যাচে দানি কারবাহালের গোলে সহায়তা করে বনে যান ইউরোর সর্বকনিষ্ঠ গোল সহায়ক।
ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে ১৬ বছর ৩৬২ দিন বয়সে গোল করে কিংবদন্তি পেলের দুটি রেকর্ড ভাঙেন ইয়ামাল। একটি হলো সবচেয়ে কম বয়সে ইউরো অথবা বিশ্বকাপের মতো কোনো আসরে গোল করা এবং অপরটি সেমি-ফাইনালে মাঠে নামা। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে এই দুই কীর্তি গড়েন পেলে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে মাঠে নামলে পেলেকে সরিয়ে সবচেয়ে কম বয়সে ইউরো অথবা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার রেকর্ড গড়বেন ইয়ামাল। ফাইনালে গোল করতে পারলে আবারও পেলের রেকর্ড নিজের করে নেবেন তিনি। আর স্পেন শিরোপা জিতলে হবেন সবচেয়ে কম বয়সে ইউরো অথবা বিশ্বকাপ জয়ের মালিক। এখানেও ভাঙবেন ১৭ বছর ২৪৯ দিন বয়সে ১৯৫৮ বিশ্বকাপ জেতা পেলের রেকর্ড।
মন্তব্য করুন: