ফুটবল স্টেডিয়ামে যত বিপর্যয়

২ ডিসেম্বর ২০২৪

ফুটবল স্টেডিয়ামে যত বিপর্যয়

গিনির একটি ফুটবল ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে পদদলিত হয়ে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর এনজেরেকোরে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তবে এটিই ফুটবল মাঠে সমর্থকদের মাঝে ঘটা একমাত্র সংঘর্ষের ঘটনা নয়। গত কয়েক দশকে ফুটবল স্টেডিয়ামে এরকম আরও বড় বিপর্যয় ঘটেছে।

২০২২ সালের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার কানজুরুহান স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি এবং পারসেবায়া সুরাবায়ার ম্যাচ শেষে মাঠের মধ্যে দুদলের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ালে কমপক্ষে ১২৫ জন নিহত হয়। আহতের সংখ্যা ৩২০ ছাড়িয়ে যায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

একই বছর জানুয়ারিতে ক্যামেরুনের ইয়াউন্দে ওলেম্বে স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের শেষ ষোলোর ম্যাচ শুরুর আগে পদদলিত হয়ে আট জন নিহত এবং ৩৮ জন আহত হন। 

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিশরের পোর্ট সাইদে আল-মাসরি ও আল-আহলির মধ্যে ম্যাচ শেষে সমর্থকদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত এবং এক হাজারের বেশি আহত হন। এর ফলে মিশরীয় ফুটবল লিগ দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। 

২০০৯ সালের মার্চে আফ্রিকার দেশ কোট দে ভোয়ার আবিদজানের একটি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে বিশৃঙ্খলার কারণে ১৯ জন মারা যান।

ঘানায় ২০০১ সালের মে মাসে রাজধানী আক্রার প্রধান স্টেডিয়ামে পুলিশের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের পর পদদলিত হয়ে ১২৬ জন মারা যান। এটি আফ্রিকার অন্যতম ভয়াবহ ফুটবল দুর্ঘটনা।

একই বছর এপ্রিলে এরকম আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে দক্ষিণ আফ্রিকায়। জোহানেসবার্গের এলিস পার্ক স্টেডিয়ামে একটি শীর্ষ লিগ ম্যাচ চলার সময় দর্শকরা স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করলে ৪৩ জন মারা যান।

১৯৯৬ সালের অক্টোবরে গুয়াতেমালায় স্বাগতিকদের সঙ্গে কোস্টা রিকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ চলাকালে গ্যালারি থেকে পড়ে ৮২ জন নিহত এবং অন্তত ১৪৭ জন আহত হন। 

১৯৯২ সালের মে মাসে ফ্রান্সের ফিউরিয়ানি শহরের একটি স্টেডিয়ামে ফরাসি কাপ সেমি-ফাইনালের আগে একটি স্ট্যান্ড ধসে ১৮ জন নিহত এবং ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হন। 

তার আগের বছর জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ওর্কনির ওপেনহাইমার স্টেডিয়ামে একটি প্রাক-মৌসুম ম্যাচ চলার সময় পদদলিত হয়ে ৪২ জন মারা যান। 

১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের শেফিল্ডের হিলসবরো স্টেডিয়ামে লিভারপুল ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের মধ্যে এফএ কাপ সেমি-ফাইনালের আগে পদদলিত হয়ে ৯৬ জন লিভারপুল সমর্থক মারা যান। এই ঘটনায় আহত এক সমর্থক ২০২১ সালে মস্তিষ্কে ক্ষতির কারণে মারা যান।  

১৯৮৮ সালের মার্চে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকায় শিলাবৃষ্টির মধ্যে পদদলিত হয়ে ৯০ জনের বেশি মারা যান। 

১৯৮৫ সালের মে মাসে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের একটি স্টেডিয়ামে ইউভেন্তুস ও লিভারপুলের মধ্যে ইউরোপীয় কাপের ফাইনালের আগে সংঘর্ষে ৩৯ জন নিহত এবং ৬০০ জনের বেশি আহত হন। 

একই মাসে ব্রিটেনের ব্র্যাডফোর্ডের একটি স্টেডিয়ামে আগুন লেগে ৫৬ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হন। 

১৯৮২ সালের অক্টোবরে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ইউরোপীয় কাপের ম্যাচ শেষে পদদলিত হয়ে সরকারি হিসেবে মারা যান ৬৬ জন। তবে প্রকৃত সংখ্যা ৩৪০ জনের মতো হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এই ঘটনা তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল।

মন্তব্য করুন: