গল্প লিখব বলেই এসেছি

২৪ মার্চ ২০২৩

গল্প লিখব বলেই এসেছি

ঢেউয়ের তালে খলবলিয়ে নিরন্তর কথা বলত যে নদী, সেটাও কখনো কখনো মরে যায়। নীরবে। হরফে-অক্ষরে শব্দ-বাক্যের বন্ধুতায় অনুক্ষণ উচ্ছ্বাসে ভাসত যে পাঠককূল, তাঁরাও নাকি তেমনি ফুরিয়ে যাচ্ছে। নিঃশব্দে।

সত্যিই কি তাই? নাকি পাঠকরা ভালো লেখা খুঁজে পান না। তারই অভাবে তাঁদের মুখ ফিরিয়ে নেয়া! পড়ার চেয়ে দেখার কিংবা শোনার সহজবোধ্য মাধ্যমে স্থানান্তর?

ঠিক জানি না। তবে এটা জানি, আমরা লিখতে চাই। ভালো ভালো লেখা পাঠকদের দিতে চাই। ফেরাতে চাই সেই পাঠাভ্যাস, যা এক সময় ছিল আমাদের যাপিত জীবনের অভ্যস্ত অনুষঙ্গ। ওই গন্তব্যে চোখ রেখেই পথচলা শুরু এই ওয়েবসাইট ‘অল আউট স্পোর্টস’-এর।

অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয় না। উটের মতো বালিতে মুখ গুঁজে থাকলেই অস্বীকার করা যায় না বাস্তবতা। সে বাস্তবতা বলছে, পাঠক কমছে। লিখিত শব্দের প্রতি ভালোবাসা কমছে আলোর গতিতে। আধুনিক সময়ের চাহিদায়, রুদ্ধশ্বাস ছুটে চলা মুহূর্তগুলো কেড়ে নিয়েছে পড়ার সময়।

তার চেয়ে ঢের সহজ, মুঠোয় থাকা মোবাইলে চোখ বোলানো। ইউটিউব/ফেসবুকে প্রয়োজনীয় (কিংবা অপ্রয়োজনীয়) খবরটা দেখে-শুনে নেয়া। একের পর এক মতামত আসতেই থাকে সেখানে। তার সঙ্গে নিজের মতটা মিলিয়ে নেয়া। অত কষ্ট করে পড়ার ধৈর্য তাই থাকবে কেন!

এই বাস্তবতা উপেক্ষার অর্থ মূর্খতার প্রশয়। আমরা তা করছি না। ‘অল আউট স্পোর্টস’-এর তাই ভিডিও কনটেন্ট আছে। প্রবলভাবেই আছে। সেখানে ক্রিকেট-ফুটবল-টেনিসসহ সব খেলার কনটেন্ট পাবেন। তবুও প্রচ্ছন্নে একটা হাহাকার কি কান পাতলে শোনা যায় না? লেখায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকার জন্য কারও কারও মনে তো আকুতি থাকতেই পারে, নাকি!

এটা কোনো নিউজ ওয়েবসাইট না। বরং এখানে আমরা গল্প বলব। অবশ্যই খেলার গল্প। খেলোয়াড়দের গল্প। সেই সঙ্গে তাঁদের কীর্তির গল্প। কীর্তিমান হয়ে ওঠার গল্প। সর্বোপরি আমরা বলব খেলার মোড়কে জীবনের গল্প

নিজের কথাই বলি। সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটাই কেটেছে লিখে লিখে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হবার পর থেকেই। প্রায় দুই দশক সময়ে দেশের প্রথম শ্রেণীর দৈনিক, সাপ্তাহিক, ওয়েবসাইটে লিখেছি। সময়ের প্রয়োজনে কাজের ধরন বদলে এখন আমি লিখি না বললেই চলে। বরং বলি। অবিশ্রান্ত বলতেই থাকি। আমাদের ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ ‘নট আউট নোমান’-এর দর্শক-শ্রোতারা এর সাক্ষ্য।

তবুও মনের গোপন গহীনে লেখাটা কি মিস্ করি না? করি। ঘুঘুডাকা বিষন্ন দুপুরের রোদ্দুরের মতো মিস করি। আবার নিজেকে পাঠকের জায়গায় বসিয়ে ভাবি, ভালো একটা লেখা পড়ার জন্য কী গভীর তৃষিত থাকি! আমরা বিশ্বাস করি, অমন পিপাসা নিয়ে অনেক পাঠক রয়ে গেছেন। এখনও।

অল আউট স্পোর্টস সেই পাঠকদের জন্য। প্রথাগত ওয়েবসাইটের নিয়ম মেনে এখানে আমাদের যুদ্ধ সময়ের সাথে না। এটা কোনো নিউজ ওয়েবসাইট না। বরং এখানে আমরা গল্প বলব। অবশ্যই খেলার গল্প। খেলোয়াড়দের গল্প। সেই সঙ্গে তাঁদের কীর্তির গল্প। কীর্তিমান হয়ে ওঠার গল্প। সর্বোপরি আমরা বলব খেলার মোড়কে জীবনের গল্প।

জানি না, পাঠকদের হৃদয়ে তা নাড়া দেবে কিনা! তবে চেষ্টার খামতি থাকবে না, সে প্রতিশ্রুতি দিতে পারি। আপনি যদি পাঠক হিসেবে প্রতি দিন একবার ঘুরে যান ‘অল আউট স্পোর্টস’, একবার এখানে আসার তাড়না অনুভব করেন, একটি মাত্র লেখাও পড়েন -- সেটাই হবে আমাদের সার্থকতা।

বদলে যাওয়া সময়ে এ চ্যালেঞ্জটা বড্ড কঠিন। সবাই ভয় দেখায়, ঘর থেকে বের হলেই মেঘ দেখার। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, ‘অল আউট স্পোর্টস’ দিয়ে মেঘের বদলে জোছনায় উদ্ভাসিত আকাশ দেখব। পাঠকের উপর আমাদের এতটাই আস্থা। পাঠকের ভালোবাসার জন্য আমাদের এতটাই কাঙালপনা।

মন্তব্য করুন: